রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;
নেত্রকোনা সদর উপজেলাধীন আমতলা ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের ফাতেমা আক্তার বয়স আনুমানিক ৭৫। ঝড়, বৃষ্টি,শীত উপেক্ষা করেই বিগত ১৩ বছর ধরে (আমতলা-নেত্রকোনা) সড়কের পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অসহায় ৭৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা। পথচারীদের দেওয়া খাবার ও অর্থে উপর নির্ভর করে কোনরকম ভাবে বেঁচে আছেন তিনি।
সম্প্রতি পথের ধারে জীবন সংগ্রামের টিকে থাকা ফাতেমা আক্তারকে নিয়ে (গত ১৪ নভেম্বর/২০২৩) তারিখে (৭১ টিভি) নিউজ চ্যানেলের মাধ্যমে এ অসহায় বৃদ্ধার জীবন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ এর দৃষ্টিগোচর হয়।
জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ বিষয়টি তাৎক্ষণিক নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হককে তদন্ত করে সমাধানের নির্দেশ প্রদান করেন। ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক পুলিশ সুপরের নির্দেশ মাতাবেক তাৎক্ষণিক (৫নং আমতলা ইউনিয়ন) বিট অফিসার মোঃ সোহেল রানা’কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্তে বিট অফিসারের দেওয়া তথ্য সূত্রে জানাযায়, ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা ফাতেমা আক্তারের বাড়ি উপজেলার বায়রাউড়া গ্রামে। ছোট বেলায় মা’কে হারানোর পর তার তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তখন সৎ মায়ের কাছে জায়গা হয়নি ফাতেমা ও তার বোনের। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন চলতো তাদের। কিছুদিন পর ফাতেমা তার ছোটবোনকে ঝগড়াকান্দা গ্রামে বিয়ে দিয়ে তিনিও সেখানে থেকে যান।
এক সময় তার বোনজামাই সহ অন্য আত্মীয়রা ফাতেমার কাছে টাকা ধার নেয়। টাকা নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন হয়ে যায়, ফাতেমা তার নিজের পাওনা টাকা চাইতে গেলে মারধর করতো তার আত্মীয়স্বজনেরা যে তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৬৩০০০ (তেষট্টি) হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গত (৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ লুৎফুল হক নিজে অসহায় বৃদ্ধা ফাতেমা আক্তারে কাছে গিয়ে উদ্ধারকৃত ৬৩০০০(তেষট্টি) হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন। টাকা হস্তান্তরের সময় পুলিশ প্রশাসনের সাথে উপস্থিত ছিলেন, স্বাবলম্বী সংস্থার কোহিনুর আক্তার এবং একাত্তর টিভির প্রতিনিধি সুব্রত সাহা সুমনসহ এলাকার স্থানীয় লোকজন।